Supreme Court : নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে বাংলা থেকে সরানো হোক সন্দেশখালি মামলা, আবেদন সুপ্রিম কোর্টে
বিগত ক'দিন ধরেই খবর শিরোনামে সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। ওই এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, শাহজাহান ও তাঁর বাহিনী রাতের পর পর মেয়ে-বউদের তুলে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন চালাত। এবার এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে এই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়। চার দফা দাবিও জানানো হয়েছে। প্রথমত, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই বা সিট গঠন করে তদন্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মণিপুরের মতো সন্দেশখালিতেও হাই কোর্টের তিন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। তৃতীয়ত, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চতুর্থত, প্রশাসনের যে সব আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিন আইনজীবী অলোক বলেন, “সন্দেশখালিতে যে সব তথ্য উঠে আসছে তাতে বাংলায় সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া সম্ভব নয়, তাই ন্যায়বিচারের জন্য মামলাটি রাজ্যের বাইরে সরিয়ে আনা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করে তাঁকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন, তার থেকে প্রমাণ হচ্ছে প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়।” এছাড়াও সন্দেশখালিতে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের আর্জিও জানান তিনি। সূত্রের খবর, দ্রুত তদন্ত সম্পূর্ণ করে দিল্লির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সময়সীমা বেঁধে বিচার প্রক্রিয়ার আবেদন জানিয়েছেন অলোক শ্রীবাস্তব।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই সন্দেশখালি নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলা করার অনুমতি চেয়েছেন আইনজীবী সংযুক্তা সামন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সন্দেশখালিতে দ্রুত সিআরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ। আগামী সোমবার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, আজও অধরা শেখ শাহজাহান। ৫ জানুয়ারি রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। কিন্তু, সেই সময় তাঁর অনুগামীদের হাতে হেনস্থা হতে হয় ইডি আধিকারিকদের। কোনওরকমে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। এই ঘটনার পর থেকেই শাহজাহানের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। মহিলাদের উপর অত্যাচার থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়া, আবাস যোজনার টানা না দেওয়া, জলের দরে জমি হাতিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই সন্দেশখালি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গ্রামের মহিলাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। সন্দেশখালির আঁচ রাষ্ট্রপতির ভবন পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। আজ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সন্দেশখালি নিয়ে এক রিপোর্ট জমা দিয়েছে তফসিলি কমিশন।