ED Raid In Hooghly : ঘুমের ঘোর কাটার আগেই ভুল বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ল ইডি!
সাত সকালে তখনও ঘুম ঘোর কাটেনি। তার মধ্যেই আচমকা দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। বাড়ির উঠোন ততক্ষণে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে ছয়লাপ। সেই দৃশ্য দেখে বাড়ির সদস্যরা তখন ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপছেন। কী করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না। কোনওরকমে ভয়ে ভয়ে বাড়ির দরজা খুলে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করেন। জানতে পারেন ইডি তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে এসেছে। কিন্তু, সাতে পাঁচে না থাকা চুঁচুড়ার ময়নাডাঙার ব্যবসায়ী সন্দীপ কুমার সাধুখাঁ বুঝেই উঠতে পারছিলেন না যে তাঁর বাড়িতে কেন ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি চালাতে এলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপবাবুর লজেন্সের ব্যবসা রয়েছে। পোলবা থানা এলাকার মহেশপুরে রয়েছে তাঁর কারখানা। সেখানে কয়েকজন শ্রমিক কাজও করে। আজ সকালে সবাই তখন সবে ঘুম থেকে উঠেছিলেন। ঠিক সেই সময় ইডি এসে ডাকায় বেশ কিছুটা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে শুধুমাত্র তিনিই নন, অবাক হয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁরা জানান, সাধুখাঁ পরিবার কারও সাতে পাঁচে থাকেন না। হুট করে কেন তাঁদের বাড়িতে ইডি এল তা বুঝতেই পারছিলেন না তাঁরা।
বাড়ির বাইরে ইডি ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কনভয় দেখে প্রথমে কিছুটা হকচকিয়ে গিয়েছিলেন সন্দীপবাবু। এরপর ইডির সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা কথা কাটাকাটি হয় তাঁদের। তারপর একপ্রকার হাল ছেড়ে দিয়ে ইডিকে তল্লাশি চালানোর অনুমতিও দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, মেমো নম্বরে সই করার সময়ই খটকা লাগে সন্দীপবাবু। দেখেন তাঁর নাম ঠিক থাকলেও তাঁর বাবার নামের বানান ভুল রয়েছে। তার সঙ্গে চুঁচুড়া থানারও কোনও উল্লেখ ছিল না। মেমো নম্বরে সই করতে অস্বীকার করেন সন্দীপবাবু। তখন ইডি আধিকারিকরা সন্দীপবাবুর ভোটার ও আধার কার্ড দেখাতে বলেন। তখনই ভুল ভাঙে ইডি আধিকারিকদের। বুঝতে পারেন নাম বিভ্রাটের জেরে ভুল বাড়িতে চলে গিয়েছেন তাঁরা। ভুল বুঝতে পেরে সোজা বেরিয়ে পড়েন ওই বাড়ি থেকে। এদিকে ইডি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর যুদ্ধ জয়ের হাসি ফোটে সাধুখাঁ পরিবারের মুখে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সন্দীপবাবুর ছেলে শুভদ্বীপ বলেন, "আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। কলকাতায় চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনায় আমরা সবাই বেশ ভয়ে পেয়ে গিয়েছিলাম। কী করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তারপর মেমো নম্বরে সই করতে গিয়ে দেখতে পাই নামের বানান ভুল রয়েছে। থানার নামও সেখআনে উল্লেখ করা নেই। তখনই আমাদের সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি ইডিকে জানাই। তারপর ওঁরা যাচাই করে দেখে বুঝতে পারেন ভুল বাড়িতে চলে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁরা বেরিয়ে যান।"
তবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বেশ তৎপর ইডি। রাজ্যের একাধিক জায়গায় চলে তল্লাশি। একদিকে ঝাড়গ্রামে যখন ডব্লুবিসিএস অফিসারের আবাসনে অভিযান চলছে, তখন হুগলির চুঁচুড়াতেও ইডির হানা। অন্যদিকে বহরমপুরের বিষ্ণুপুরে এক পঞ্চায়েত কর্মীর বাড়িতেও মঙ্গলবার সকালে গিয়ে হাজির হয় ইডি। সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজে প্রায় ১.৭৯ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলায় তদন্তে নেমেছে ইডি।
Trending Tag