Hemant Soren:হেমন্তের রাঁচির বাড়িতে ইডি, এলাকা ঘিরে কড়া নিরাপত্তা
Mayuri Datta | 15:20 PM, Wed Jan 31, 2024
Leopard: দলগাঁও চা বাগানে খাঁচায় বন্দী চিতাবাঘ
Mayuri Datta | 13:58 PM, Wed Jan 31, 2024
Imran Khan: আরও বিপাকে ইমরান খান, তোষাখানা দুর্নীতি মামলায় ১৪ বছরের সাজা
Mayuri Datta | 13:40 PM, Wed Jan 31, 2024
Bengali Cinema: ‘শাস্ত্রী’ সিনেমায় ফের দেখা যাবে মিঠুন- দেবশ্রী জুটি, দর্শকমহলে উন্মাদনা
Mayuri Datta | 12:48 PM, Wed Jan 31, 2024
PM on Budget: বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই নারী শক্তিতে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী
Mayuri Datta | 12:22 PM, Wed Jan 31, 2024
Kolkata Police : সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী পুলিশ কনস্টেবল
Mayuri Datta | 11:43 AM, Wed Jan 31, 2024
Budget 2024: আজ শুরু বাজেট অধিবেশন
Mayuri Datta | 10:36 AM, Wed Jan 31, 2024
Kashmir Snowfall: শ্বেতসুন্দরী কাশ্মীর, সাদা বরফের চাদরে পার্বত্য এলাকা
Mayuri Datta | 10:30 AM, Wed Jan 31, 2024
Kolkata high court: বিচারপতি দ্বন্দ্বের জের! প্রাথমিক মামলা সরানো হল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে
Mayuri Datta | 17:50 PM, Tue Jan 30, 2024
Chandigarh Mayor Election: চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে জয়ী বিজেপি, ব্যর্থ 'ইন্ডিয়া' মঞ্চ!
Mayuri Datta | 17:39 PM, Tue Jan 30, 2024
Uttarakhand : উত্তরাখণ্ডের প্রথম মহিলা মুখ্যসচিব হচ্ছেন রাধা রাতুরি
Mayuri Datta | 17:14 PM, Tue Jan 30, 2024
Sandeshkhali incident: এবার সন্দেশখালিতে গেল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধি দল
গত কয়েক দিন ধরেই সন্দেশখালির পরিস্থিতি উত্তপ্ত। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ, শিবু হাজরাদের গ্রেফতারির দাবিতে গত সপ্তাহে পথে নেমেছিলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের বিরুদ্ধে এলাকায় অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সন্দেশখালিকে হাতিয়ার করে শাসকদলকে আক্রমণ করেছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিরোধীদের উস্কানিতেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি। এবার সেখানে পৌঁছল শিশু সুরক্ষা কমিশনও। শনিবার সন্দেশখালিতে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস, পরামর্শদাতা সুদেষ্ণা রায়-সহ মোট ৪ প্রতিনিধি। ঘুরে ঘুরে গ্রামগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন তাঁরা। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিতে এক শিশুর উপর অত্যাচারের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। এক শিশুকে তাঁর মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন পদক্ষেপ করে।
সন্দেশখালি পৌঁছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিদের সামনে পেয়ে ওই শিশুর মা জানান, সেদিন পর থেকে তাঁর বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রীতিমত আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে বাচ্চাটি দিন কাটাচ্ছে। এরপর সুদেষ্ণা রায় জানান, “ শিশুটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। ২৪ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।“ পাশাপাশি শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। সন্দেশখালিতে যেসব পড়ুয়া এইবছর পরীক্ষা দিচ্ছে সেসব পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির কী অবস্থা, সবরকম পরিষেবা পরীক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, বিগত কদিন ধরেই সন্দেশখালিকাণ্ডের জেরে উতপ্ত গোটা রাজ্য। আপাতত সন্দেশখালির ১৯টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সন্দেশখালির আঁচ পৌঁছেছে রাষ্ট্রপতির দফতরেও। এমনকি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে এবিষয়ে। বিরোধীরা লাগাতার প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে। আজ সন্দেশখালি কাণ্ডের প্রতিবাদে ও সেখ শাহজানের গ্রেফতারের দাবীতে পথে নামলো সারাভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্যারা । শনিবার বর্ধমানের কার্জনগেট চত্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল দাহ করা হয়।বর্ধমান স্টেশনে থেকে মিছিল করে কার্জনগেট চত্বরে হাজির হয়ে বিক্ষোভ দেখায় মহিলা সমিতির সদস্যারা।তবে কোর্ট কম্পাউণ্ডের দিকে রাস্তায় ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। রাজ্য মহিলা সমিতির নেত্রী অঞ্জু কর বলেন, “আমরা চাই অবিলম্বে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করা হোক।“
পাশাপাশি আজ বসিরহাটে আইএসএফ এর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তাপস ব্যানার্জীর নেতৃত্বে হাজার খানেক কর্মী সমর্থক টাউন হল থেকে মিছিল করে এসে এসপি অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ দেখায়। তাদের দাবী সন্দেশখালি কাণ্ডের যারা মূল অভিযুক্ত শেখ শাহাজাহান শিবু হাজরা সহ যেসব অভিযুক্তরা আছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে । এরপর সন্দেশখালি কাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এসপি অফিসে ডেপুটেশন জমা দেয়।
Supreme Court : নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে বাংলা থেকে সরানো হোক সন্দেশখালি মামলা, আবেদন সুপ্রিম কোর্টে
বিগত ক'দিন ধরেই খবর শিরোনামে সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। ওই এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, শাহজাহান ও তাঁর বাহিনী রাতের পর পর মেয়ে-বউদের তুলে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন চালাত। এবার এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে এই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়। চার দফা দাবিও জানানো হয়েছে। প্রথমত, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই বা সিট গঠন করে তদন্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মণিপুরের মতো সন্দেশখালিতেও হাই কোর্টের তিন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। তৃতীয়ত, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চতুর্থত, প্রশাসনের যে সব আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিন আইনজীবী অলোক বলেন, “সন্দেশখালিতে যে সব তথ্য উঠে আসছে তাতে বাংলায় সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া সম্ভব নয়, তাই ন্যায়বিচারের জন্য মামলাটি রাজ্যের বাইরে সরিয়ে আনা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করে তাঁকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন, তার থেকে প্রমাণ হচ্ছে প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়।” এছাড়াও সন্দেশখালিতে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের আর্জিও জানান তিনি। সূত্রের খবর, দ্রুত তদন্ত সম্পূর্ণ করে দিল্লির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সময়সীমা বেঁধে বিচার প্রক্রিয়ার আবেদন জানিয়েছেন অলোক শ্রীবাস্তব।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই সন্দেশখালি নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলা করার অনুমতি চেয়েছেন আইনজীবী সংযুক্তা সামন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সন্দেশখালিতে দ্রুত সিআরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ। আগামী সোমবার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, আজও অধরা শেখ শাহজাহান। ৫ জানুয়ারি রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। কিন্তু, সেই সময় তাঁর অনুগামীদের হাতে হেনস্থা হতে হয় ইডি আধিকারিকদের। কোনওরকমে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। এই ঘটনার পর থেকেই শাহজাহানের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। মহিলাদের উপর অত্যাচার থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়া, আবাস যোজনার টানা না দেওয়া, জলের দরে জমি হাতিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই সন্দেশখালি গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গ্রামের মহিলাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। সন্দেশখালির আঁচ রাষ্ট্রপতির ভবন পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। আজ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সন্দেশখালি নিয়ে এক রিপোর্ট জমা দিয়েছে তফসিলি কমিশন।
Sandeshkhali incident: সন্দেশখালি যাওয়ার আগে বার বার পুলিশি বাধা, 'খালি হাতে' ফিরল BJP-র ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম
সন্দেশখালি (Sandeshkhali) না গিয়েই কলকাতায় ফিরলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul) সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রতিনিধি দল। সন্দেশখালিতে নির্যাতিতাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার তরফে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম তৈরি করে দেওয়া হয়। সেই দলটির শুক্রবার সন্দেশখালি যাওয়ার কথা ছিল। সেই মতো সকালে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। এই টিমে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, সাংসদ সুনীতা দুগ্গল, কবিতা পাতিদার, সঙ্গীতা যাদব এবং বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজলাল। বাংলা থেকে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল ও সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
আজ সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বাসন্তী হাইওয়ের কাছে রামপুরে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রতিনিধিদের আটকে দেয় বসিরহাট থানার পুলিশ। প্রতিবাদে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করে বিজেপি। সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি থাকার জন্যই পুলিশ তাঁদের যেতে বাধা দেয়। এই পরিস্থিতি প্রতিনিধি দলের এক সদস্য সন্দেশখালিতে যাওয়ার জন্য আবেদন জানান। যদিও তাতেও রাজি হয়নি পুলিশ। কোনও মতেই সন্দেশখালিতে যাওয়া যাবে না বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়। এরপর পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা। এরপর রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। প্রায় ২ ঘণ্টা রাস্তার উপর বসে ছিলেন। তারপর বাধ্য হয়ে কলকাতায় ফেরেন।
প্রশ্ন উঠছে কেন বার বার কেন বিরোধীদের সেখানে যেতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ? কি চাপা দিতে চাইছে প্রশাসন? এবিষয়ে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “আগেই বলেছিলাম আমরা চারজন যাব, তাও আটকে দিল পুলিশ। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এমনকী মুখ্যমন্ত্রিও নন”।এনিয়ে বিজেপির তরফে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার সুকান্ত মজুমদার সন্দেশখালি যেতে চাইলে তাঁকে টাকিতে আটকে দেয় পুলিশ। এরপর পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারান তিনি। এরপর কলকাতার এক নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন সুকান্ত। তারপর বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি যাওয়ার পথে সরবেড়িয়ায় বাঁশের ব্যারিকেড করে শুভেন্দু অধিকারীকে আটকে দেয় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ হালদারের নেতৃত্বে সন্দেশখালিতে গিয়েছিল তফসিলি কমিশন। জানা গিয়েছে, কমিশনকে সামনে পেয়ে গ্রামের মহিলারা তাঁদের অভিযোগ জানান। রাতের পর রাত তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের উপর যে অত্যাচার চলত সে কথা তুলে ধরেন। তাঁদের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার সকাল ১১ টায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দেয় তফসিলি কমিশন। তবে রিপোর্টে কি আছে তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেনি কমিশনের প্রতিনিধিরা।
Mimi Chakraborty: প্রার্থী না হতে চেয়ে মমতাকে চিঠি সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। আর তার ঠিক আগেই তৃণমূলের অন্দরে জোর কোন্দল। একের পর এক সাংসদদের ইস্তফা নিয়ে বিপাকে তৃণমূল কংগ্রেস। কদিন আগেই ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব ইস্তফা দেন। যদিও শেষপর্যন্ত তাঁকে মানিয়ে ধরে রেখেছেন মমতা ব্যানার্জি। এবার দেবের দেখানো পথেই হাঁটলেন আরেক তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মমতাকে চিঠি লেখেন মিমি। এরপর বৃহস্পতিবার তাঁকে বিধানসভায় ডাকা হয়। সেইমত আজ সকালে উপস্থিত হন তিনি। সূত্রের খবর একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর চিঠিতে। চিঠিতে তিনি জানান তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। নানানভাবে বহু জায়গায় হেনস্থার শিকার হচ্ছেন তিনি । তবে জানা যাচ্ছে চিঠিতে কারোর নাম উল্লেখ করেনি মিমি। তবে সূত্রের খবর, নিজের দলের বিরোধী গোষ্ঠীর ওপর ক্ষোভের কারনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারকা সাংসদ। শুধু তাই নয়, করোনাকালে যাদবপুর কেন্দ্রে কী কী কাজ করেছেন, সেই কথাও চিঠিতে লিখে জানিয়েছেন মিমি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে প্রথমবারের জন্য তৃণমূলের টিকিটে যাদবপুর থেকে লোকসভা ভোটে লড়েন তিনি। এরপর সিপিআই(এম) এর নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে হারিয়ে সাংসদ হন অভিনেত্রী।
এদিন মিমি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, “ রাজনীতি আমার জন্য না। এটা আমি বিশ্বাস করি। আমি যদি কিছু বাজে কাজ করতাম বা করেছি তাহলে তো আপনারাই সবার আগে দেখাতেন। আমি নিজের দল তো ছেড়েই দিন অন্য দলকে নিয়েও কখনো খারাপ কথা বলিনি। তাহলে আমাকে কেন এত খারাপ কথা শুনতে হবে। আমি দিল্লিতে থাকলে বলা হয় সাংসদ তো দিল্লিতেই থাকেন আবার কলকাতায় থাকলে বলা হবে আমি তো দিল্লিতেই যাই না। আমি আজ আমার কাজের হিসাব দিতে আসিনি। এমপি ল্যাড ইউটিলাইজেশনে কার নাম এক নম্বরে আছে দেখে নিন। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে খুব ভালোবাসেন। স্নেহ করেন। আমি দুই দিন আগে আমার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। দিদির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু উনি এখনও সেটা অ্যাকসেপ্ট করেননি। উনি অ্যাকসেপ্ট করলে আমি লোকসভার স্পিকার কে পাঠিয়ে দেবো। আমার যে অভিযোগ ছিলো সেটা আমি দিদিকে জানিয়েছি। দেখি উনি কি স্টেপ নেন। কাদের কাছ থেকে বাঁধা পেয়েছি, সেটা আমার দলের সুপ্রিমোকে জানিয়েছি।“
“তিনি আরও বলেন,”দলের সদস্যপদ এখনও রয়েছে। আইনত রাজনীতি থেকে সরতে গেলে যা যা করার সেটাই আমি করেছি। আমি প্রার্থী হতে চাই না।“
এদিন মিমির ইস্তফা প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, “ শিল্পীরা আজ বীতশ্রদ্ধ। তৃণমূল নিজের স্বার্থে এই শিল্পীদের ব্যবহার করে। নিজেদের পাক এই শিল্পীদের গায়ে ফেলে দেয়।” বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, যারা গণতন্ত্র লুঠ করার চক্রান্ত দেখতে পারছেন না তারাই বেরিয়ে আসছেন, কেউ আগে মুখ খুলছে, কেউ পরে।”
Sandeshkhali Incident : সরবেড়িয়ায় আটকানো হল বাস, রাস্তায় বসে বিক্ষোভ শুভেন্দুর
বৃহস্পতিবার বিজেপির তরফে ফের একবার সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। যদিও ১৯টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। তার মধ্যেই ১৪৪ ধারার নিয়ম মেনে মাত্র তিন জন বিজেপি বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বাসে করে সন্দেশখালি যাওয়ার প্রস্তুতি নেন শুভেন্দু। তিন জন বিজেপি বিধায়কের মধ্যে ছিলেন তাপসী মণ্ডল, চন্দনা বাউড়ি এবং শঙ্কর ঘোষ।
এদিন বিধানসভার সামনে থেকে তাঁদের বাস ছাড়ে। বাসে ওঠার আগে শুভেন্দু বলেন, “আজ যদি পুলিশ তাঁদের আটকায় তাহলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন”। যদিও বাসন্তী হাইওয়েতে কিছুক্ষণের জন্য তাঁদের বাস আটকায় পুলিশ। পরে ছেড়েও দেওয়া হয়। এরপর ফের সরবেড়িয়াতে আটকে দেয় পুলিশ। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেখানে এক কর্তব্যরত এসডিপিও জুতো দিয়ে শুভেন্দুর পায়ে আঘাত করেন। তারপরই শুভেন্দু সহ বিজেপির নেতারা রাস্তায় বসে পরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালি যাওয়ার পথে সায়েন্স সিটির কাছে শুভেন্দুকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ।
অন্যদিকে শুভেন্দুর সন্দেশখালি যাত্রা আটকাতে পুলিশি তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। সন্দেশখালির আগে রামপুরে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা ঘিরে রাখে প্রশাসন। জায়গায় জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নামানো হয়েছে ব়্যাফ। ধামাখালির রামপুর থেকেই জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। গোটা এলাকাকে দুর্গে পরিণত করে ফেলেছে প্রশাসন।
উল্লেখ্য বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ৫ জানুয়ারি তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির অভিযানকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তাঁর অনুগামীদের হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। এক আধিকারিকের মাথা ফাটে। ইডির পাশাপাশি হামলা চালানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরও। তবে এখনও পর্যন্ত শাহজাহানকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এরপর শাহজাহান ও তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসে। গ্রামবাসীরা তাঁর গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামেন। সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। যদিও মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় সরকার। তবে বুধবারে নতুন করে ১৯টি জায়গা স্পর্শকাতর বলে উল্লেখ করে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। সন্দেশখালি ঘাট, খুলনা ঘাট, বোলাখালি ঘাট, ত্রিমণি বাজার, পাত্র পাড়া, দুর্গামণ্ডপ জিপির গাববেড়িয়া মার্কেট, দুগুড়ি পাড়া, দাউদপুর, ধামাখালি ঘাট, হালদার পাড়া, পিঁপড়ে খালি ঘাট সহ আরও বেশ কিছু জায়গায় আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
ইতিমধ্যে রাজ্যপাল গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। পিছিয়ে নেই কোনও রাজনৈতিক দলও। মঙ্গলবার বসিরহাট এসপি অফিস অভিযান করে বিজেপি। তাকে ঘিরে খণ্ডযুদ্ধ বাধে বিজেপি ও পুলিশের মধ্যে। এরপর বুধবার টাকি থেকে সন্দেশখালি যাওয়ার পথে সুকান্ত এবং কয়েকজন বিজেপি কর্মীদের আটকে দেয় পুলিশ। সেসময় বচসার জেরে আঘাত পান সুকান্ত যার জেরে তিনি কলকাতার এক নার্সিংহমে চিকিৎসাধীন।
Sukanta Majumdar : বমি বমি ভাব সুকান্তর, স্যালাইন ছাড়া কিছুই নিতে পারছেন না
মঙ্গলবার সুকান্তের সন্দেশখালি যাত্রা নিয়ে টাকিতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ টাকির এক হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে সরস্বতী প্রতিমা হাতে নিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর ইছামতীর পাড়ে বসে সরস্বতী পুজো করে সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁকে আটকে দেয়। এরপরই সেখানে সুকান্ত সহ বিজেপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা শুরু হয়। বচসা চলাকালীন পুলিশের গাড়ির উপর উঠে যাওয়ায় সুকান্ত মজুমদারকে জোর করে নামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। সেই ধস্তাধস্তিতে গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারান তিনি। এরপর তাঁকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করে বিজেপি কর্মীরা। যদিও স্থানীয় হাসপাতালে তাঁর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাতেই তাঁকে কলকাতার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে আসা হয়। নিউরো ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে তাঁকে। রাতেই তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে পেটে, বুকে, মাথায়, ঘাড়ে ও স্পইনাল কর্ডে। ডঃ এস এন সিং এর নজরদারিতে ভর্তি রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্যালাইন ও অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ।
গতকালই দিল্লি থেকে ফিরে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "আমার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে বাংলার মানুষের কাছে রিপোর্ট দেওয়া। আমি রাজ্যর নির্বাচিত সরকারের কাছে, রিপোর্ট চেয়েছি অপেক্ষা করছি, তারপর দরকার পড়লে রিপোর্ট পাঠাব দিল্লিতে। আমায় কিছুটা সময় দিন। সংবিধানের ১৭৫ (২) ধারা অনুযায়ী আমার নির্দেশিকা সরকারের কাছে পৌঁছে যাবে। তারপরে এই বিষয়ে আমি কথা বলব।”
এরপর সোজা সেখান থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে দেখতে বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছে যান। সুকান্তর চিকিৎসা ভালো চলছে বলে জানান তিনি।
সুকান্ত প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আই সি ইউ তে আছেন সুকান্ত, তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শারীরিক হেনস্থা হয়েছে তাঁর। আমার মনে হয় মমতার নির্দেশেই হয়েছে। স্যালাইন ছাড়া কিছু নিতে পারছেন না। বমি ভাব আছে। ওঁর বিশ্রাম দরকার। ভালো চিকিৎসা হচ্ছে। যদিও আমরা ক্রস চেক করেও চিকিৎসার উপর নজর রাখছি।” এরপরই সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বলেন, "৯২০ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। প্রত্যেক বিজেপি কর্মীর সঙ্গে আমরা আছি। গ্রেফতার হলে আমরা দাঁড়াব তাঁদের পাশে।" সেই সঙ্গে আজ ফের সন্দেশখালি যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
Sukanta Mazumdar : টাকিতে অসুস্থ সুকান্ত, ভর্তি করা হল হাসপাতালে
মঙ্গলবার বসিরহাট এসপি অফিস অভিযানকে ঘিরে খণ্ড যুদ্ধ বাধে বিজেপি ও পুলিশের মধ্যে। আটক করা হয় সুকান্ত এবং কয়েক জন বিজেপি কর্মীদের। পরে সুকান্তকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এদিন ফের সন্দেশখালিতে যাবেন বলে জানান তিনি। রাতে টাকির একটি হোটেলে ছিলেন সুকান্ত। পরিকল্পনা ছিল হোটেলেই সরস্বতী পুজো করে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেবেন। এদিকে তাঁকে সন্দেশখালি যাওয়া থেকে আটকাতে হোটেলে মোতায়েন ছিল পুলিশও। কিন্তু, বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে সরস্বতী প্রতিমা হাতে নিয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর ইছামতীর পাড়ে বসে সরস্বতী পুজো সারেন। পূর্বপরিকল্পনা মাফিক টাকি থেকে সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। এরপরই বিজেপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা শুরু হয়।
জানা গিয়েছে, বচসা চলাকালীন পুলিশের গাড়ির উপর উঠে যান সুকান্ত। গাড়ি থেকে সুকান্ত মজুমদারকে জোর করে নামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু, ধস্তাধস্তিতে তিনি গাড়ি থেকে পড়ে যান এবং জ্ঞান হারান। তারপর চোখেমুখে জল দিয়ে তাঁর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। ওই সময় তড়িঘড়ি তাঁকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায় সুকান্তর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও বিজেপি কর্মীরা।
বিজেপির দাবি, সরস্বতী পুজোর জন্য উপোস করেছিলেন সুকান্ত। ধস্তাধস্তির সময় পুলিশের গাড়ির চালক গাড়ি চালিয়ে দেওয়াতেই পড়ে যান তিনি। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে।
প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি রেশন বণ্টন দুর্নীতিকাণ্ডে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে ইডি। মাথা ফাটে এক ইডি আধিকারিকের। ইডির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরও হামলা চালানো হয়। যদিও সেই ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত শাহজাহানের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর আচমকা শাহজাহান ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে সরব হন গ্রামের মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের মধ্যে অত্যাচার চালাত শাহজাহান। ঘর থেকে বউদের তুলে যেত তাঁর শাগরেদরা। শুধু তাই নয় আবাস যোজনা, ১০০ দিনের টাকাও তাঁরা পাননা বলে অভিযোগ করছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। সেখানে প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এরপর মঙ্গলবার হাইকোর্টের নির্দেশে সন্দেশখলিতে ১৪৪ ধারা তুলে নিতে বাধ্য হয় রাজ্য। এরপর নতুন করে ফের ১৯টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে সন্দেশখালি ঘাট, খুলনা ঘাট, বোলাখালি ঘাট, ত্রিমণি বাজার, পাত্র পাড়া, দুর্গামণ্ডপ জিপির গাববেড়িয়া মার্কেট, দুগুড়ি পাড়া, দাউদপুর, ধামাখালি ঘাট, হালদার পাড়া, পিঁপড়ে খালি ঘাট সহ আরও বেশ কিছু জায়গায়। তার মধ্যেই আজ সন্দেশখালিতে যেতে উদ্যত হন সুকান্ত।
Sandeshkhali: ফের ১৪৪ ধারা জারি সন্দেশখালিতে
গোটা সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ভৎসনার মুখে পরে রাজ্য প্রশাসন। আদালত ১৪৪ ধারা জারির করার কারন জানতে চাইলে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য। এরপরই ১৪৪ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন,” কোন কোন অঞ্চলে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি,১৪৪ ধারা জারি করার আগে প্রশাসনের পুরো পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনার প্রয়োজন ছিল”। ফলে আদালতের রায় মেনে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় রাজ্য। তবে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে নতুন করে ১৯টি জায়গা স্পর্শকাতর উল্লেখ করে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধামাখালি ঘাট সহ সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের ১৯টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করার নির্দেশিকা জারি করেছে প্রশাসন। যার মধ্যে সন্দেশখালি ঘাট, খুলনা ঘাট, বোলাখালি ঘাট, ত্রিমণি বাজার, পাত্র পাড়া, দুর্গামণ্ডপ জিপির গাববেড়িয়া মার্কেট, দুগুড়ি পাড়া, দাউদপুর, ধামাখালি ঘাট, হালদার পাড়া, পিঁপড়ে খালি ঘাট সহ আরও বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি থাকবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বেশ কদিন ধরেই অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি। অবিলম্বে শাহজাহানকে গ্রেফতারে দাবিতে গতকাল বসিরহাট এসপি অফিস ঘেরাও অভিযানে যান বিজেপির সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি কর্মীরা। অভিযানকে ঘিরে তুমুল অশান্তি হয় বসিরহাটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় উত্তেজিত বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য। সব মিলিয়ে ধন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বসিরহাট এসপি অফিস চত্বরে। বিজেপির মহিলা কর্মী সমর্থক সহ বেশ কিছু বিজেপি কর্মীরা আহত হয়। এরপর বাসন্তী ব্লকের পালবাড়ি বাজারের রাস্তা অবরোধ করে সন্ধ্যা থেকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। তাদের বিক্ষোভের মূল কারণ ছিল রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ হাজারের বিজেপির কর্মী সমর্থক ও মহিলাদের উপর পুলিশি প্রশাসনের ও নির্বিচার।যার জেরে তারা পথ অবরোধ করে।
পাশাপাশি, মঙ্গলবার দুপুরে সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন ও সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়নের ডাকে একাধিক দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে বহরমপুরে জেলা শাসক দফতর অভিযান কে কেন্দ্র করে উতপ্ত হয়।উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও জেলার সিপিএমের নেতৃত্বরা।সভা শেষ করেই জেলা শাসক অফিস অভিযান করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাঁধে বাম কর্মীদের ।পুলিশ কে লক্ষ্য করে পাল্টা ইট ছুড়তে থাকেন বাম কর্মীরা। পাল্টা পুলিশ কাঁদানী গ্যাসের সেল ফাটায় এবং লাঠি চার্জ করে। ঘটনাকে ঘিরে রনক্ষত্রের চেহারা নেয় বহরমপুর শহর।
High court on Sandeshkhali : সন্দেশখালি নিয়ে হাইকোর্টে ধাক্কা রাজ্যের
উত্তপ্ত সন্দেশখালিকে শান্ত করতে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল রাজ্যপ্রশাসন। এই নিয়ে মঙ্গলবার মামলা ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানেই প্রশ্নের মুখে পরে রাজ্য। এদিন আদালত ১৪৪ ধারা জারির কারন জানতে চায় রাজ্যের কাছে। কিন্তু তা নিয়ে কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেনি প্রশাসন। এরপরই ১৪৪ ধারা বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত। গোটা পরিস্থিতিকে খুব যত্ন নিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে বলে পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সাথে এলাকায় বেশি করে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর পর্যবেক্ষণ, "কোন কোন এলাকায় গণ্ডগোল হচ্ছে তা উল্লেখ করা হয়নি ১৪৪ ধারা জারির বিজ্ঞপ্তিতে। ১৪৪ ধারা জারি করার আগে পরিস্থিতি পর্যালোচনার প্রয়োজন ছিল বলে বলে তাঁর মত। এ কদিন যা যা ঘটনা সামনে এসেছে, তা নিয়ে বিচারপতি বলেন, “যে সব অভিযোগ আসছে সেটা গুরুতর”। পুলিশ তিন বছর ধরে মামলা গ্রহণ করেনি, মহিলাদের নিরাপত্তার অভাব আছে”। ১৪৪ ধারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২-৩ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হলেও বোঝা যেত কিন্তু গোটা সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করার এ মুহূর্তে প্রয়োজনীয়তা নেই”।
এদিন মামলাকারীদের আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, “১৪৪ ধারা জারি করা ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ আছে। এ ক্ষেত্রে তা মানেনি রাজ্য”।
প্রসঙ্গত, আজ বিজেপির এসপি অফিস অভিযানকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বসিরহাট। শেখ শাহাজানকে গ্রেফতার এবং বিকাশ সিংহের মুক্তির দাবিতে বিজেপির পক্ষ থেকে বসিরহাট এসপি অফিস অভিযান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দুটো থেকে এসপি অফিস অভিযান শুরু হয় বসিরহাটে বিজেপির সাংগঠনিক দলীয় কার্যালয় থেকে। সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে এক বিশাল মিছিল করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। সকাল থেকেই এই অভিযান ঘিরে পুলিশের তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। বসিরহাট এসপি অফিসের সামনেই পুলিশের বিশাল ব্যারিকেড গড়ে তোলা হয়। ব্যারিকেডের সামনে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা পৌঁছানোর পর পুলিশের সাথে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। এরপরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। বিজেপি কর্মীদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের, তারপর ইট বৃষ্টি করা হয় বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য। পুলিশের দাবি বিজেপির মিছিল থেকেই প্রথমে ইট ছোড়া হয় পুলিশের দিকে। তারপরেই পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য। একই সাথে পুলিশের পক্ষ থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় উত্তেজিত বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার লক্ষ্য রেখে। সব মিলিয়ে ধন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বসিরহাট এসপি অফিস চত্বরে। বিজেপির মহিলা কর্মী সমর্থক সহ বেশ কিছু বিজেপি কর্মীরা আহত হয়।
Sandeshkhali News: তৃণমূলের প্যান্ডোরা বক্স খুলে যাবে : সুকান্ত মজুমদার
সন্দেশখালির উত্তাল পরিস্থির মাঝেই ট্রেনে চেপে সন্দেশখালির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন সুকান্ত মজুমদার। বসিরহাটের উদ্দেশ্যে হৃদয়পুর স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেনে চেপে রওনা দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। রাস্তায় পুলিশের বাধ আটকাতে সুকান্ত বাবুর এই পদক্ষেপ। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি এদিন বলেন, “১০০০ টাকা দিয়ে বাংলার মহিলাদের ইজ্জত নেবেন এটা বিজেপি চলতে দেবে না।রাজ্যসরকার ভয় পাচ্ছে, বিজেপি গেলে তৃণমূলের প্যান্ডোরার বক্স খুলে যাবে, তাই বিজেপিকে ওখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না”। তাঁর আরও দাবি, “পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে শাহজাহানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে”।
মঙ্গলবার এপ্রসঙ্গে বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান বলেছেন, 'সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। আগুনে ঘি ঢালার চেয়ে, আগুন নেভানো উচিত”।
উল্লেখ্য মঙ্গলবার পুলিশের এক ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার সহ ১০ জনের মহিলা পুলিশের দল সন্দেশখালিতে পৌঁছেছে। সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের সমস্যার কথা শোনেন বলে জানা যায়। মঙ্গলবার ইন্টারনেট পরিষেবা পুনর্বহাল করা হয়েছে। এর আগে বেশ কয়েকদিন একালায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এখনও উত্তপ্ত সন্দেশখালি। অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। গোটা ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। প্রকাশ্যে এসেছে শেখ শাহজাহান ও তাঁর বাহিনীর অত্যাচারের কাহিনী। পরিস্থিতির হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে সোমবার সন্দেশখালি যান রাজ্যপাল। সেখানেই গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলার পর যথা সম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। যদিও সোমবার সন্দেশখালি যাওয়ার মাঝপথে শুভেন্দু অধিকারীদের আটকে দেয় পুলিশ। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। ইতিপূর্বে হিংসায় জড়িত থাকার কারনে তৃণমূলের উত্তম সর্দার ও বিজেপির বিকাশ সিংহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও ফের গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। সন্দেশখালিকাণ্ডে শেখ শাজাহান,শিবু হাজরার গ্রেফতার এবং সন্দেশখালীর প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার ও বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার আহবায়ক বিকাশ সিংহের নিঃশর্তে মুক্তির দাবীতে সিপিআইএম ও বিজেপির পৃথক পৃথকভাবে আজ দুপুর থেকেই বসিরহাট এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি রয়েছে বিজেপি ও সিপিআইএম এর । বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিজেপির এই ঘেরাও আন্দোলন কর্মসূচীতে অংশ নেবেন। সিপিআইএমের স্থানীয় নেতৃত্ব ও রাজ্যনেতৃত্বের ও সেখানে যাবার কথা আছে। তার আগেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।গোটা এলাকা জুড়ে পুলিশি টহলদারি চলছে সাথে মাইকিং এর মাধ্যমে পাঁচজনের বেশি এক জাগায় জমায়েত করা যাবে না বলে প্রচার করা হচ্ছে। যদি কেউ জমায়েত করে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করবে বলে জানানো হচ্ছে। বসিরহাটের সংগ্রামপুরে এসপি অফিসের থেকে ৫০০ মিটার দূরে সামনে এবং পেছনে উভয় দিকেই ব্যারিকেট দিয়ে রাখা হয়েছে। ইছামতি নদীর ওপর যে ব্রীজ রয়েছে সেই ব্রীজ টপকে কোন রকম ভাবেই ব্যারিকেড ভেঙ্গে ভিতরে না প্রবেশ করতে পারে তার জন্য প্রশাসন যথেষ্ট সক্রিয়।
Sandeshkhali : "আমাদের বাঁচান...", অশান্ত সন্দেশখালিতে রাজ্যপালের কাছে কাতর আর্জি মহিলাদের
সন্দেশখালিকাণ্ডে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। বিগত কদিন ধরেই তৃণমূলনেতা শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও। এদিকে ১৪৪ ধারা জারি থাকায়ে সন্দেশখালিতে বিরোধীদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। তাই সেখানে ১৪৪ ধারা তোলার দাবিতে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ধারা তোলা না হলে, সেই ধারা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এদিকে মঙ্গলবার বসিরহাট এসপি অফিস ঘেরাও অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে। বামেরাও সোমবার সন্দেশখালিতে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে।
এর মাঝেই সোমবার সকালে সন্দেশখালি পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কেরালা সফর কাটছাঁট করে সন্দেশখালিতে যান তিনি। কিন্তু, সকাল ১১টা নাগাদ মালঞ্চের কাছে পৌঁছতেই রাজ্যপালের কনভয় আটকে দেয় তৃণমূল কর্মীরা। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তারা। রাস্তার দু’পাশে প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার হাতে নিয়ে ১০০ দিনের বকেয়া টাকা মেটানোর দাবি তুলতে দেখা যায় তাদের। বিক্ষোভের জেরে মিনাখাঁ বিডি অফিসের সামনে প্রায় চার মিনিটের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল রাজ্যপালের কনভয়। তারপর পুলিশের হস্তক্ষেপে সেখান থেকে আবার সন্দেশখালিতে রওনা দেন তিনি। রাজভবনসূত্রে খবর, এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে কথাও বলেছেন সি ভি আনন্দ বোস।
রাজ্যপাল সন্দেশখালি পৌঁছলে তাঁকে উলুধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানান স্থানীয় মহিলারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন সিভি আনন্দ বোস। রাখিও পরিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যপালের হাতে। তারপরই দীর্ঘদিন ধরে চলা, শাহজাহান শেখ সহ উত্তম সদ্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরার অত্যাচারের বর্ণনা তুলে ধরা হয় রাজ্যপালের সামনে, লিখিত অভিযোগও জানানো হয়। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে উত্তম তবে এখনও অধরা শিবু আর তা নিয়েই খবর আগুনে ফুটছে সন্দেশখালির বাসিন্দারা। ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও রাত হলেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ও প্রশাসনের একাংশ মিলে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের হুমকি দিচ্ছে বলেও মহিলারা অভিযোগ করেন রাজ্যপালের কাছে। স্থানীয় মহিলাদের অভিযোগ শুনে গ্রামবাসীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল। মহিলাদের কাতর আরতি "আমাদের বাঁচান"। রাজ্যপাল জানান, “যা করার করব”।
এদিকে সন্দেশখালি নিয়ে ফের সরগরম বিধানসভা। “সঙ্গে আছি সন্দেশখালি” লেখা জামা গায়ে দিয়ে অধিবেশনে ঢোকেন বিজেপি বিধায়করা। তাতে আপত্তি জানিয়েছেন স্পিকার। এমন ঘটনায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। হুইসেল বাজান তাঁরা। শেষে ওয়াকআউট করেন। এরপর মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ বিজেপি পরিষদীয় দলকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দেন। পরে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সেই প্রস্তাব সংশোধন করে ৬ জন বিধায়ককে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দেন। ওই ছয়জনের মধ্যে রয়েছেন বঙ্কিম ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, শুভেন্দু অধিকারী, তাপসী মণ্ডল, মিহির গোস্বামী ও শংকর ঘোষ। তৃণমূল পরিষদীয় দলের দাবি, “শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি পরিষদীয় দল অভব্য আচরণ করেছে। অধিবেশনের কাগজপত্র ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। হুইসল বাজানো হচ্ছিল। এমন আচরণ দেখেই বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।”
শুভেন্দুর দাবি, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় আসেন না। বিধানসভায় সন্দেশখালি নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেননি। আমরা প্রশ্ন তোলায় সাসপেন্ড করা হয়েছে। সন্দেশখালির মা বোনেদের সম্মান বাঁচাতে যদি এভাবে সাসপেন্ড করা হয় তাহলে ভয় করব না লড়াই করে যাব”। জানা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়কদের সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বাসন্তী হাইওয়েতে ওঠার আগেই আটকে দিয়েছে পুলিশ।
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আজ সকালে রাজ্যের মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছি,তাঁরা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।”
Anubrata Mondal : বীরভূমে কেষ্টতেই ভরসা তৃণমূলের! মঙ্গল কামনায় যজ্ঞের আয়োজন শহরজুড়ে
বীরভূমের দাপুটে নেতা ছিলেন তিনি। তাঁর নামে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত। তিনিই ছিলেন বীরভূম জেলার শেষ কথা। তাঁর নির্দেশ ছাড়া বীরভূমের একটা পাতাও নড়ত না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন তিনি। কিন্তু, এখন তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। গরু ও কয়লা পাচার মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি ও সিবিআই। প্রায় দেড় বছর আগে ১১ অগাস্ট ২০২২ সালে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। এখন অবশ্য তিহাড়ের চার দেওযালের মধ্যেই তাঁর দিন কাটছে। বহুবার জামিনের জন্য আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু, প্রতিবারই তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। এদিকে সামনেই লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু, তাঁকে ছাড়া নির্বাচন তৃণমূল কতটা দাগ কাটতে পারবে সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, অনুব্রত না থাকায় দলীয় কর্মীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে। আর সেই কারণে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ময়দানে নেমেছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো। বহুবার বীরভূমে গিয়ে সভা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এমনকী, জেল বন্দি কেষ্টর পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি। কেষ্টর হয়ে প্রকাশ্য সভায় সুর চড়াতেও শোনা গিয়েছে তাঁকে। এরই মাঝে আচমকা বিশেষ হোমযজ্ঞের আয়জন করা হয়েছে বীরভূম তৃণমূলের তরফে। প্রশ্ন উঠছে কেন হটাৎ এই যজ্ঞের আয়জন করল দল? তবে কি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজের গড়ে ফিরছেন অনুব্রত? জেলে যাওয়ার পরও যে অনুব্রত তাঁর স্নেহভাজন রয়েছেন তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। এমনকী, বীরভূমে কেষ্টই যে তাঁর একমাত্র ভরসার পাত্র তাও জানিয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই আবারও কেষ্ট রব উঠেছে বীরভূমজুড়ে।
শহরজুড়ে পোস্টার পড়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের শুভকামনায় যজ্ঞ হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি। সকাল ৯টা নাগাদ বোলপুর রেলময়দান দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে এই যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। তবে কারা এই যজ্ঞ করছেন, তা পোস্টারে উল্লেখ করা নেই ৷ যদিও, বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য বিকাশ রায়চৌধুরী জানান, “মানুষ তাঁর অনুপস্থিতি অনুভব করতে পারছে, আমাদের নিজেদেরকে অভিভাবকহীন মনে হচ্ছে তিনি না থাকায়, লোকসভা নির্বাচনে অনুব্রতর ছবি সামনে রেখেই ভোট হবে”।
Sandeshkhali Incident : "বউদের তুলে নিয়ে যাওয়া হত পার্টি অফিসে", ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সন্দেশখালির মহিলাদের
বেশ কয়েকদিন ধরেই অশান্তির আগুনে পুড়ছে সন্দেশখালি। বিক্ষোভ, অবরোধ, ভাঙচুর কোনও কিছুই বাদ যায়নি। শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেখানে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। মূলত, তৃণমূলের অত্যাচারে জেরবার স্থানীয় বাসিন্দারা। দিনের পর দিন ধরে এলাকায় অত্যাচার চালিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের ভয়ে তঠস্থ হয়ে ছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কিন্তু, এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর অবশেষে প্রকাশ্যে এসে প্রতিবাদ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন সন্দেশখালির মহিলারা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিগত কয়েক বছর ধরেই দলের নাম ভাঙিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে তৃণমূল নেতা শাহজাহান ও তাঁর দলবল। এলাকায় অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। কথা না শুনলেই স্থানীয়দের প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হত। শুধু তাই নয় তাঁদের সামনে নিরাপদ ছিলেন না মহিলারাও। অভিযোগ, কোন বাড়ির বউকে কেমন দেখতে, তাঁদের বয়স কত তা আগে দলের তরফে এসে দেখে যাওয়া হত। এরপরই স্বামীর কাছে যেত হুমকি। বলা হত, রাতে যেন বউকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একরাত বা দু-রাতের ঘটনা নয়, রাতের পর রাত তুলে নিয়ে চলত অত্যাচার। জোর করে পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। তারপর সকালে আবার বাড়িতে ফেরত পাঠানো হত বলে অভিযোগ। গ্রামের এক মহিলা বলেন, "ভোটের সময় অত্যাচারের মাত্রা দ্বিগুণ হত। জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হত মিটিং, মিছিলে। সেখানেই চাপ দেওয়া হত শাসকদল কে ভোট দিতে। ভোট না দিলে মিলত প্রাণনাশের হুমকি।" তাঁদের আরও অভিযোগ, ১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা কোনও কিছুই তাঁরা পাননি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত থেকে সন্দেশখালির ১৬ টি পঞ্চায়েত জুড়ে প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। এর মাঝেই পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রামের ১৭১ জনকে বিনাদোষে গ্রেফতার করার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। গ্রেফতার হওয়া এক ব্যক্তির দিদি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, "শাহজাহান গ্রামেই আছেন। পুলিশের সঙ্গে মিটিং করছেন। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এই অত্যাচার দেখে তাঁর লজ্জা পাওয়া উচিত। পুলিশ প্রশাসন তাঁদের উর্দিকে কলঙ্কিত করছে।" গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামের অনেক জমি দখল করে মাছের ভেড়ি তৈরি করে ফেলেছেন শাহজাহান। এমনকী, বাচ্চদের স্কুলের খেলার মাঠও জবরদখল হয়ে গিয়েছে। কোনও কিছুই ছাড়েনি তৃণমূল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শনিবার বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস ঘোষ ও বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে যান। তবে ধামাখালি রোডে পুলিশ আটকে দেয় তাঁদের। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করেন বিজেপি বিধায়করা। অবিলম্বে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়ার দাবিতে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তাঁরা। সেখানে অবিলম্বে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানানো হয়।
Sandeshkhali Incident : অশান্তি অব্যাহত সন্দেশখালিতে, অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি ১৪৪ ধারা
দিনটি ছিল ৫ জানুয়ারি, রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি চালাতে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক অপেক্ষার পর তালা ভাঙতে যায় ইডি আধিকারিরা। সেখানেই ঘটে বিপত্তি। শাহজাহানের অনুগামীরা চরাও হয় তাঁদের ওপর। দুষ্কৃতীদের হাতে ইডি আধিকারিক সহ সাংবাদিকরা মার খান, ভেঙ্গে দেওয়া হয় একাধিক গাড়ি । সেই দিন থেকে এখনও পর্যন্ত শাহজাহান বেপাত্তা। যদিও গ্রামবাসীদের দাবি, শাহজাহান এলাকাতেই আছেন।পুলিশ জানে তাঁরা কোথায় লুকিয়ে আছে। গ্রেফতার না করে পুলিশ তাঁদের সঙ্গে গোপন ডেরায় বসে মিটিং করছে।
বেশকদিন ধরেই শাহজাহানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন গ্রামবাসিন্দারা । শুক্রবার সকালেও রাস্তায় নামেন তাঁরা। তবে গতকাল মূলত গ্রামের মহিলারা ঝাঁটা, লাঠি হাতে নিয়ে সন্দেশখালির রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে, সেই বিক্ষোভের আঁচ গিয়ে পরে স্থানীয় থানায়। শাহজাহান শেখ (Sheikh Shahjahan), শিবপ্রসাদ হাজরা ও উত্তম সর্দারের গ্রেফতারির দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান। তৃণমূল নেতার পোলট্রি ফার্ম জ্বালিয়ে দেয় গ্রামবাসী। তাদের অভিযোগ দলের নাম ভাঙিয়ে অত্যাচার চালায় শাহজাহান আর তাঁর দলবল। জোর করে তাঁদের জমি দখল করা থেকে শুরু করে কাজ করিয়ে টাকা না দেওয়ার মতন নানান অভিযোগ উঠে আসে মহিলাদের গলায়। পুলিসের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ গ্রামের ১৭১ জনকে বিনা দোষে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এরপরই তাঁরা জানান “ আমাদের দেওয়ালে পিঠ থেকে ”।
এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটে সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। মোট ১৬ টি পঞ্চায়েত জুড়ে এই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।এরসাথে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকালরাতে নবান্ন থেকে জানান হয়েছে সন্দেশখালিকাণ্ডে দোষীদের কঠিন শাস্তি দেবে সরকার। তারপরই বিশাল পুলিশবাহিনী সঙ্গে নিয়ে ডিজি এসসিআরবি সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, আইজি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এস আর ঝাঁঝারিয়া, ডিআইজি বারাসত সুমিত কুমার, এসপি বসিরহাট ঘটনাস্থলে যায়।
গতকাল রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, পুরো পরিস্থিতি আপাতত পুলিশের আওতায় আছে, তদন্ত চলছে, দোষীদের চিহ্নিত করে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শাহজাহানের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন “এটি তদন্তের বিষয়,তদন্তে যা উঠে আসবে সেই মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে”।গতকালের ঘটনাতে আপাতত আটজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে রাজভবনের সামনে মিছিল করে বিজেপি বিধায়করা। অবিলম্বে ১৪৪ ধারা তুলে নিয়ে সন্দেশখালিতে শান্তি ফেরানোর দাবিতে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তাঁরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শান্তি ফেরাতে পারলে ১৪৪ ধারা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
আজ বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস ঘোষ ও বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে গেলে পুলিশ ব্যারিকেড করে আটকে দেয় ধামাখালি রোডে।
West Bengal Budget 2024 : বাড়ল লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা! ভোটমুখী বাজেটে ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর
আজ বিধানসভায় দুপুর ৩টে নাগাদ রাজ্য বাজেট পেশ করেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অতিরিক্ত ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েই আগামী অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করে সরকার। এই দিন বাজেটে কী চমক থাকে তার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন রাজ্যবাসী। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হয় লক্ষ্মীর ভান্ডার। যার মাধ্যমে ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের রাজ্য সরকারের তরফে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। আর জনজাতি সম্প্রদায়ের মহিলারা পান ১০০০ টাকা। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে সেই প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশনে জানানো হয়েছে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে বর্ধিত সহায়তা চালু হবে। উপভোক্তারা মে মাস থেকে এর সুবিধা পাবেন। মে মাস থেকে ৫০০ টাকার পরিবর্তে মিলবে ১০০০ আর ১০০০ টাকার পরিবর্তে মিলবে ১২০০ টাকা। বাজেটে এই ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। এর জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে অতিরিক্ত ১,২০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি।
শুধু তাই নয়, মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের জন্য 'সমুদ্র সাথী' নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে। একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি রাজ্যই দেবে বলে ঘোষণা করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে ৩৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। বাজেট অধিবেশনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আরও চার শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা (DA) বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেন চন্দ্রিমা। এই ঘোষণার পর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বেড়ে হল ১৪ শতাংশ।
এছাড়া বাজেটে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাতা বাড়ানোর ঘোষণাও করেছেন মন্ত্রী। তাঁদের ভাতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০০ টাকা। এর জন্য ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এছাড়া এখন থেকে রাজ্য পুলিশের চাকরিতে ২০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য। চন্দ্রিমার দাবি, বামফ্রন্টের আমলে ৫৭.৬০ শতাংশ রাজ্যবাসী দারিদ্রসীমার নীচে ছিলেন। কিন্তু, তৃণমূলের আমলে ২ কোটির বেশি মানুষের জীবিকা সংস্থান হয়েছে। এবার থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে ভর্তি হলেই স্মার্টফোন পাবে বলে বাজেটে ঘোষণা মন্ত্রীর। পাশাপাশি বাজেটে চারটি নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ গঙ্গা এবং দামোদর নদীর উপর সেতু তৈরি করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
Sandeshkhali Incident : উত্তপ্ত সন্দেশখালি, শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতে বাঁশ হাতে রাস্তায় মহিলারা
একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে সন্দেশখালিতে। তৃণমূলের দাপুটে নেতা শেখ শাহজাহান, ব্লক সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা এবং তাঁর সঙ্গী উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে লাঠি ও বাঁশ হাতে রাস্তায় নামেন স্থানীয় মহিলারা। জানা গিয়েছে, তাঁরাও তৃণমূল কর্মী। দলের নাম ভাঙিয়ে শাহজাহান ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বহুদিন ধরেই এলাকায় অত্যাচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এর প্রতিবাদেই আজ সকালে প্রতিবাদে নামেন তাঁরা। সন্দেশখালি থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। এরপর রাস্তায় বসেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরার লোকজন মিলে প্রথমে নিজেদের পোলট্রি ফার্মে ভাঙচুর চালায়। তারপর সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এই গোটা ঘটনার দায় ঠেলে গ্রামবাসীদের উপর। তারই প্রতিবাদে এলাকার মহিলারা বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সন্দেশখালি থানায়।
তাঁদের আরও অভিযোগ, শাহজাহান এতদিন ধরে একের পর এক জমি দখল করেছে। তাঁর ভয়ে মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে গিয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের এক মহিলার অভিযোগ, বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে এসে তাঁদের উপর অত্যাচার চালাতেন শাহজাহান। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আজ রাস্তায় নেমেছে তাঁরা। পুলিশের কাছে গেলেও কোনও সমাধান মিলত না বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক মহিলা বলেন, "থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখান থেকে শাহজাহানের কাছে পাঠিয়ে দিত। আবার শাহজাহানের কাছে গেলে বলে শিবু হাজরার কাছে যাও। গ্রামের মানুষ কোথায় যাবেন?"
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতির তদন্তে ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষের শেখ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে গিয়েছিল ইডি। কিন্তু, অনেক ডাকাডাকির পরও বাড়ির দরজা খুলতে দেখা যায়নি কাউকে। প্রায় ঘণ্টা খানেক ডাকাডাকির পর কেন্দ্রীয় বাহিনী তালা ভাঙার চেষ্টা করে। তখনই শাহজাহানের অনুগামীরা তাঁদের উপর চড়াও হয়। ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা চালায়। মেরে এক ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ইডি আধিকারিক সহ সাংবাদিকদের মারধর করে গ্রাম ছাড়া করে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত শাহজাহানের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁকে বার বার হাজিরা দিতে বলা হলেও তা এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। শাহজাহান কোথায় রয়েছেন তা এক বিক্ষোভকারীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "শাহজাহান বাঘ হয়ে বিড়ালের মতো লুকিয়ে আছে!"