Pakistan Currency : এবার মোদীর পথ অনুসরণ করবে পাকিস্তান!
বছর কয়েক আগে ক্ষমতায় এসে দেশে ‘কালা ধন’ এর বাড়বাড়ন্ত রুখতে নোটবন্দীর পথে হেঁটেছিল মোদী সরকার। এবার নিজেদের দেশে কালো টাকা এবং জাল নোটের সমস্যা রুখতে মোদীর দেখানো পথেই হাঁটবার কথা ভাবছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। আর্থিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা ভারতের এই দেশটি খুব শীগগিরিই ‘নোটবন্দী’র পথে হাঁটবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরেই দারিদ্র, আর্থিক সঙ্কট, মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যাগুলি নিয়ে নাজেহাল পাকিস্তান। এতটাই যে বারবার সরকার বদলেও মেটেনি সমস্যা। পাকিস্তানী জনগণও প্রবলভাবে সরকারের সমালোচনায় মুখর। এমতাবস্থায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পথকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি।
সম্প্রতি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ‘স্টেস্ট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান’ (এসবিপি) এর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে বাজারে প্রচলিত সমস্ত পুরনো নোট বদলে নতুন নোট আনতে চলেছে সে দেশের সরকার। এর অর্থ পাকিস্তানী বাজারে চলা ২০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত সমস্ত নোট তারা বাতিল করবে। তার বদলে চালু হবে নতুন ধরণের নোট। পাকিস্তানের এই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটির তরফে জানানো হয়েছে যে সে দেশে জাল নোটের কারবার রুখতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে সরকারের তরফে।
উল্লেখযোগ্য, এর আগে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ভারতের বাজার থেকে পুরনো ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছিল। তার বদলে সরকারি তরফে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করা হয়ছিল। মোদী সরকারের যুক্তি ছিল দেশ থেকে কালো টাকার রমরমা রুখতেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা। ভারত সরকারের তরফে আরও দাবি ছিল যে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা কালো টাকা রাখছেন তারা নোট বদলের কারণে বিপদে পড়বে পাশাপাশি ভারতের অর্থনীতিতেও আসবে স্বচ্ছতা।
ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে খারাপ সম্পর্ক থাকলেও সেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথেই হাঁটতে চলেছে পাকিস্তান সরকার। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের গভর্নর জামিল আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আর্থিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নতুন এবং উন্নত মানের নোট চালু করা হবে। এই নতুন নোটগুলিতে আন্তর্জাতিক মানের বৈশিষ্ট্য থাকার পাশাপাশি প্রত্যেকটি নোটেই স্বতন্ত্র সিকিউরিটি নম্বরও থাকবে।
জামিল আরও জানিয়েছেন, চালু হতে চলা নতুন নোটগুলির নকশাও অত্যাধুনিক মানের করা হয়েছে যাতে সেগুলিকে সহজে জাল না করা যায়। তিনি আরও বলেছেন, এই নোটবন্দীর সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি এবং অর্থ ব্যবস্থার প্রতি যাতে স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা। অন্যদিকে বৈশ্বিক অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের উদ্বেগ বেড়েছে সেখানকার বাজারে জাল নোটের রমারমা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। তাই নতুন নোট চালু হলে সে দেশের আর্থিক নির্ভরযোগ্যতা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটির গভর্ণর জামিল সংবাদমাধ্যমকে আরও জানিয়েছেন, এই নোট বদলের প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে হবে যাতে আর্থিক সামঞ্জস্য বজায় রাখা যায়। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী পাকিস্তান সেখানকার বাজারে চলা ২০টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা, ১০০০ টাকা এবং ৫০০০ টাকার নোট বদল করে নতুন নোট চালু করবে। তবে সে দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা নোটের কালো বাজারি রুখতে নতুন ৫০০০ টাকার নোট চালু করা উচিৎ কি না সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে পাকিস্তানী বাজারে ৫০০০ টাকার নোটের কারণেই পাকিস্তান আর্থিক সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছে। কারণ ৫০০০ টাকার নোট সহজেই জাল করা যায়।
Trending Tag