Sandeshkhali Incident : "বউদের তুলে নিয়ে যাওয়া হত পার্টি অফিসে", ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সন্দেশখালির মহিলাদের
বেশ কয়েকদিন ধরেই অশান্তির আগুনে পুড়ছে সন্দেশখালি। বিক্ষোভ, অবরোধ, ভাঙচুর কোনও কিছুই বাদ যায়নি। শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেখানে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। মূলত, তৃণমূলের অত্যাচারে জেরবার স্থানীয় বাসিন্দারা। দিনের পর দিন ধরে এলাকায় অত্যাচার চালিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের ভয়ে তঠস্থ হয়ে ছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কিন্তু, এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর অবশেষে প্রকাশ্যে এসে প্রতিবাদ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন সন্দেশখালির মহিলারা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিগত কয়েক বছর ধরেই দলের নাম ভাঙিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে তৃণমূল নেতা শাহজাহান ও তাঁর দলবল। এলাকায় অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। কথা না শুনলেই স্থানীয়দের প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হত। শুধু তাই নয় তাঁদের সামনে নিরাপদ ছিলেন না মহিলারাও। অভিযোগ, কোন বাড়ির বউকে কেমন দেখতে, তাঁদের বয়স কত তা আগে দলের তরফে এসে দেখে যাওয়া হত। এরপরই স্বামীর কাছে যেত হুমকি। বলা হত, রাতে যেন বউকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একরাত বা দু-রাতের ঘটনা নয়, রাতের পর রাত তুলে নিয়ে চলত অত্যাচার। জোর করে পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। তারপর সকালে আবার বাড়িতে ফেরত পাঠানো হত বলে অভিযোগ। গ্রামের এক মহিলা বলেন, "ভোটের সময় অত্যাচারের মাত্রা দ্বিগুণ হত। জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হত মিটিং, মিছিলে। সেখানেই চাপ দেওয়া হত শাসকদল কে ভোট দিতে। ভোট না দিলে মিলত প্রাণনাশের হুমকি।" তাঁদের আরও অভিযোগ, ১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা কোনও কিছুই তাঁরা পাননি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত থেকে সন্দেশখালির ১৬ টি পঞ্চায়েত জুড়ে প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। এর মাঝেই পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রামের ১৭১ জনকে বিনাদোষে গ্রেফতার করার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। গ্রেফতার হওয়া এক ব্যক্তির দিদি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, "শাহজাহান গ্রামেই আছেন। পুলিশের সঙ্গে মিটিং করছেন। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এই অত্যাচার দেখে তাঁর লজ্জা পাওয়া উচিত। পুলিশ প্রশাসন তাঁদের উর্দিকে কলঙ্কিত করছে।" গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামের অনেক জমি দখল করে মাছের ভেড়ি তৈরি করে ফেলেছেন শাহজাহান। এমনকী, বাচ্চদের স্কুলের খেলার মাঠও জবরদখল হয়ে গিয়েছে। কোনও কিছুই ছাড়েনি তৃণমূল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শনিবার বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস ঘোষ ও বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে যান। তবে ধামাখালি রোডে পুলিশ আটকে দেয় তাঁদের। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করেন বিজেপি বিধায়করা। অবিলম্বে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়ার দাবিতে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তাঁরা। সেখানে অবিলম্বে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানানো হয়।
Trending Tag